মাহমুদ ফারুক, ২৭ এপ্রিল: লক্ষ্মীপুরে এ পর্যন্ত মোট ৩৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। রবিবার (২৬ এপ্রিল) জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলার রামগঞ্জে শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ১৬, সদর উপজেলায় ১০, কমলনগরে তিন ও রামগতিতে চারজন।
এছাড়া সূত্রে আরো জানায় রামগঞ্জে ১৬জন আক্রান্তের মধ্যে একজন চিকিৎসক, ৪জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং শিশু ও রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২৭ জনকে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলার রামগঞ্জে প্রথম ও রামগতিতে দ্বিতীয় শনাক্তকারী দুই রোগীকে ঢাকার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা দুইজনেই ঢাকা এবং নারায়নগঞ্জ থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে লক্ষ্মীপুরে আসেন।
এছাড়া শনাক্তকৃত ৩৩ জনের মধ্যে একজন বৃদ্ধ শনাক্ত হওয়ার তিনদিন আগে মারা গেলেও রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তা গোপন রাখেন।
আরেকজন রাজধানী ঢাকাতে অবস্থানকালীন সময়ে তার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়। পরে তিনি লক্ষ্মীপুরে নিজ বাড়িতে পালিয়ে আসেন। খবর পেয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তাকে সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে।
এছাড়া রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা আক্রান্ত রোগী কার্তিক দাস (৩০) পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর তাকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ আটক করে।
এদিকে সর্বশেষ (২৬ এপ্রিল) রামগতি উপজেলার যে তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তারা একই পরিবারের সদস্য। সম্পর্কে তারা ভাইবোন। এদের মধ্যে দুইজন শিশু রয়েছে। শিশু হওয়ায় তাদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল ওই পরিবারের এক যুবক জ্বর-সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে নিয়ে মারা গেলেও চিকিৎসকদের সংগ্রহকৃত নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।
তবে পরিবারের সদস্য ও নিকাত্মীয়রা ধারণা করছেন, মৃত ঐ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলো। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নমুনা সংগ্রহ না করায় পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়নি। তার সংস্পর্শে এসে পরিবারের বাকি তিন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের প্রকাশিত তথ্যমতে গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত, জেলাতে ৯৪৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি’তে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ৫৯০ জনের পরীক্ষার ফলাফল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে আসে। এদের মধ্যে বাকী ৩৫৭ জনের ফলাফল এখনো পায়নি স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার জানান, করোনা পজিটিভ ২৪ জনের নমুনা পুনরায় সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের বিআইটিআইডি-তে পাঠানো হয়েছে। পর পর দুই বার দুই বার তাদের নমুনা পরীক্ষা নেগেটিভ আসলে তাদের সুস্থ্য ঘোষণা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, রামগতিতে নতুন আক্রান্ত তিনজন একই পরিবারের। এদের মধ্যে ৭ এবং ৮ বছর বয়সী দুইজন শিশু রয়েছে। আরেকজনের বয়স ১৯ বছর। তাদের শরীরের উপসর্গ না থাকায় বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রেখে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।