আনিস কবির, ১২ মে: রামগঞ্জ সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোরশেদুল আমিন বাবু’র বিরুদ্ধে রামগঞ্জ থানায় মামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় বইছে। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও লামচর ইউনিয়নবাসীদের মাঝে বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানালেন নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, জেলার রামগঞ্জ উপজেলার লামচর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী আব্দুল অদুদের সাথে কালিকাপুর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক তারেক হোসেনের ত্রানের অনিয়ম নিয়ে গত ১ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈশের হাট বাজারে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন শনিবার বিকালে লামচর গ্রামে যুবলীগের দু‘গ্রপের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ই্উনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল খায়ের ভুইয়াসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।
সৃষ্ট ঘটনায় ৫ মে বিকেলে উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ এবং সহযোগী সংগঠন দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করে আজাদ মেম্বারের জরিমানাসহ তাঁকে হুশিয়ারী দেয়া হয়।
ঐদিন রাতেই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোরশেদুল আমিন বাবুসহ ১০জনকে আসামী করে দাসপাড়া গ্রামের আহত যুবলীগ কর্মী শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে রামগঞ্জ থানা একটি মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলাতে মোরশেদুল আমিন বাবুকে ৩নং আসামী করা হয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতা রবিন ও এমরান হোসেনসহ কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, রামগঞ্জ সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোরশেদুল আমিন বাবু দেশে লকডাউন শুরু হওয়ার পরে রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় স্থানীয় এলাকাবাসীকে ঘরে রাখা, খাদ্য সংকটে থাকা পরিবারের মাঝে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেয়া এবং লকডাউনে থাকা কয়েকটি পরিবারের ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়। এতে বাবুর কার্যক্রম উপজেলাব্যপি আলোচিত হয়। ব্যক্তি স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে আস্থার প্রতীক হিসাবে ব্যপক পরিচিতি লাভ করেন।
তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক বলেও তারা দাবী করেন।
এ ব্যপারে মামলার বাদী সফিকুল ইসলাম জানান, মোরশেদুল আমিন বাবু করোনা যোদ্ধা হিসাবে যে কাজ করছে তা ভূয়া। লোক দেখানো কাজ করে ধান কেটে সে বাহবা নিতে চায়। ঘটনার দিন মোরশেদুল আমিন বাবুর নেতৃত্বে আমার উপর যে হামলা হয়েছে আমি সে বিষয়ে থানায় মামলা করেছি। আমার সর্ব্বোচ্ছ শাস্তি দাবী করছি তার। এসময় তিনি সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার করেন ১০মাস পূর্বে একটি শালিস বৈঠকে তার সাথে মোরশেদুল আমিন বাবুর সাথে তার ঝগড়া হয়েছে।
এ ব্যপারে রামগঞ্জ সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোরশেদুল আমিন বাবু জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী অবশ্যই স্বাক্ষি দিবেন আমি ঘটনার দিন কোথায় ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে।
আমি ঘটনার দিন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল খায়ের ভূইয়াসহ রামগঞ্জ থানায় অবস্থান করি। পরে খবর পাই আমাকে ৩নম্বর আসামী দিয়ে মামলা করা হয়েছে।
আমি যদি হামলার ঘটনার মূল হোতাই হই- তাহলে আমাকে কেন ১নম্বর আসামী করা হয়নি? সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে আমার গ্রহনযোগ্যতাই এক শ্রেণীর মানুষের ইর্ষার কারন।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল খায়ের ভূইয়া জানান, হামলার ঘটনাটি ছিলো একরকম। অথছ মোরশেদুল আমিন বাবুর বিরুদ্ধে দায়ের করা হলো মিথ্যা মামলা। সেদিন ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান সোহাগের সাথে যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদের সাথে বাগ্বিবিতন্ডার জেরে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। এসময় আমি তাদেরকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে নিজেও শারিরীকভাবে আহত হই।
ঘটনার সময় বাবু সেখানে ছিলোই না।
পরে আমি ও মোরশেদুল আমিন বাবুসহ রামগঞ্জ থানায় অবস্থান করি বিষয়টি সমাধানে। পরে জানতে পারি মোরশেদুল আমিন বাবুকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে, যা অত্যান্ত দুঃখজনক।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। নিরপরাধ কেউ ক্ষতিগ্রস্থ্য হবে না। তদন্তের পর বলা যাবে কে দোষী আর কে নির্দোষ।