মাহমুদ ফারুক, ২০ অক্টোবর:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর কেরোয়া ইউপি উপ-নির্বাচনে প্রশাসনের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রেখা বেগমের সমর্থকদের হামলায় সাংবাদিক এস এম জাকির হোসাইন গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত সাংবাদিক এস এম জাকির হোসেন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার রায়পুর উপজেলা প্রতিনিধি। এ ঘটনায় আজ বিকাল ৫টায় রায়পুর উপজেলার জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকরা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছেন।
আজ মঙ্গলবার রায়পুর উপজেলার ৬নং কেরোয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচনে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার এস এম জাকির হোসাইন জানান, ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখি একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী মহিলা ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দিচ্ছে । এসময় ঐ মহিলাদের কথা ভিডিও রেকর্ড করার সময় শ্রমিকলীগ নেতা জামাল পাটওয়ারীর নির্দেশে কয়েকজন সন্ত্রাসী প্রশাসনের সামনেই আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমি মারাত্বকভাবে আহত হয়েছি।
হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সাংবাদিক পীরজাদা মাসুদ হোসাইন জানান, আমরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়েছি। তারই ধারাবহিকতায় ১নং ওয়ার্ড ভোট কেন্দ্রে গিয়ে কিছু মহিলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। তারা কেন দাঁড়িয়ে আছে জানতে চাইলে তারা বলেন তাদেরকে ভোট দিতে দেয়া হচ্ছে না। এসময় মহিলাদের বক্তব্য মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ড করার সময় জামাল হোসেনের লেলিয়ে দেয়া বেশ কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল যুবক এস এম জাকির হোসাইনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তিনি এসময় পুলিশের হস্তক্ষেপ না হলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতো বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
হামলার বিষয়ে ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ নেতা জামাল হোসেন জানান, সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পিটিয়ে আহত করার ঘটনা সঠিক নয়।
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত সাংবাদিক জাকির হোসাইনের শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মাথা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছেঅবস্থার উন্নতি না হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হবে।
কেন্দ্রের নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা রায়পুর থানার এসআই ইয়াসিন আরাফাতের মুঠো ফোনে একাধিকবার কল করে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রায়পুর থানার ওসি মোঃ আবদুল জলিল জানান, আমি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে হামলার বিষয়ে জানতে পেরেছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলার সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল, রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান কামাল এবং রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন। এরপরই উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে আজ ২০ অক্টোবর এই তিনটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদ পূরণের লক্ষ্যে উপ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ও রায়পুর উপজেলার কেরোয়ায় ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা চলছে। এছাড়া রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহর স্ত্রী শাহানাজ আক্তার।