মাজেদ হোসেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি: আগামীকাল রবিবার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় নির্বাচন। হটাৎ করেই পৌর শহরের বাহির থেকে বহিরাগতদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষসহ ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।। বহিরাগত বা অপরিচিত লোকের আনাগোনায় ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান দেখা দেয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
প্রকাশ্যে একটি দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে ৫৩ কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক করে একাত্বতা পোষন করায় প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। বৈঠকের পর কেন্দ্রে কেন্দ্রে দলীয় অনুসারীদের রাখা হচ্ছে।
আজ শনিবার সরেজমিনে ১-৩ ও ৭ নং ওয়ার্ডের কয়েকটি এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই দিন ধরে সেসব এলাকায় বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। এসব বহিরাগত লোকজন পৌর শহরের আবাসিক হোটেল, বিভিন্ন প্রার্থীসহ তাঁদের আত্মীত্বস্বজনদের বাসা বাড়ীতে অবস্থান নিচ্ছেন। ভোটারদের ধারণা, বড় দলগুলোর প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বহিরাগতদের ভাড়া করে এনেছেন।
সম্প্রতি কেরোয়া ও মধুপুর গ্রামে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে প্রচার ও পথ সভা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির কয়েকজন কর্মী আহত হন। বহিরাগতদের উপস্থিতি ও উসকানির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন ভোটাররা। এদিকে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
রায়পুর কাঞ্চনপুরের বাসিন্দা জাহেদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি যে অবস্থায় ঠেকেছে, তাতে মনে হয় কোনো সাধারণ ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন না। মধ্যবাজার এলাকার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ক্যামনে ভোট দিমু কন ! অথচ প্রকাশ্যে একটি দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট দিতে ৫৩ কাউন্সিলকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। কাউন্সিলর প্রার্থীরা একাত্বতা প্রকাশ করেছেন। সেই অনুযায়ী কেন্দ্রে কেন্দ্রে তাদের অনুসারীদের প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনসহ সবাই তো দেখছে। প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ তো নেয়া হচ্ছে না।’
রায়পুর পৌরসভার কার্যালয় থেকে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারী রায়পুর পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়। ৪৫ হাজার জনসংখ্যার এখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার ৬৩১ জন। ৫ম বারের এই নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ছয়জন।
তাঁরা হলেন, আওয়ামীলীগ সমর্থিত গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট, বিএনপির এবিএম জিলানী, ইসলামী আন্দোলনের আবদুল খালেক, স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক মনির আহাম্মদ, নাসির উদ্দিন সগির ও মাসুদ উদ্দিন।
বহিরাগতদের আগমন প্রসঙ্গে মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির আহাম্মদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, বহিরাগতদের অবস্থান চিহ্নিত করে তা স্থানীয় প্রশাসনসহ নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। মানুষের আতঙ্কও কেটে যাবে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দিপক বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা বহিরাগতের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সঙ্গে বসে কার্যকর ব্যবস্থা নেব। ভোট যাতে অবাধ, শান্তিপূর্ণভাবে হয়, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।