
বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের যে কোন কার্যক্রমে অনুদান দেয়াসহ ২০১৪ইং সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুবদলের এই নেতা আবুল কাশেমের পরোক্ষ ইন্ধনে নির্বাচনের দিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয়াসহ নাশকতার সৃষ্টিরও অভিযোগ করেন উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। উক্ত ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩২টির অধিক মামলায় আসামী দেয়া হয় কয়েকহাজার বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীকে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, সৌদি আরব থাকাকালীন আবুল কাশেম ২০১৪ইং সনে তার ফেইসবুক আইডিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিলে পরবর্তিতে দেশে এসে তোপের মুখে পড়েন আবুল কাশেম। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের খবর ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার খবর পেয়ে নিজেকে রক্ষা করতে স্ব পরিবারে গ্রামের বাড়ী খলিফার দরজার পূর্ব পাশের বাড়ী থেকে ঢাকায় চলে যান। ঢাকা থাকার সুবাধে হটাৎ তিনি আওয়ামীলীগের কর্মী হয়ে যান। রাতারাতি নিজেকে আওয়ামীলীগ পরিচয় দিয়ে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে পোষ্টার ছেপে নিজেকে চেয়ারম্যান প্রার্থীতা দেয়ার দাবী করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ায় আবুল কাশেম উপজেলা আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতাকর্মীদের দ্বারস্থ হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবন করে আবুল কাশেম রিক্সাচালককে মারধরসহ গাড়ী দূর্ঘটনায় পতিত হন।
সাবেক ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে সৌদি প্রবাসী তারেক গাজী জানান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিয়া উল হক জিয়া ও রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ নাজিম উদ্দিন আহম্মেদের সময়কালে ও পরবর্তি সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা চেয়েও পায়নি। তারপরও যুবদল নেতা আবুল কাশেম ভাই দলের প্রতি আনুগত্য রেখে একনিষ্ঠতার সাথে কাজ করে গেছেন। বিভিন্ন সভা সেমিনারে অনুদান প্রদানসহ দলীয় কার্যক্রমে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন সন্তানের মতো। এখন তিনি কেন আওয়ামীলীগ থেকে চেয়ারম্যান হতে চাইছেন, বুঝতে পারছি না।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা সামিউল ইসলাম শাওন জানান, আওয়ামীলীগ কি এতটাই সস্তা দল হয়ে গেছে? হাইব্রিড আর কাউয়াদের কারনে দলকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। আবুল কাশেমের মতো বহু হাইব্রিড রয়েছে, যারা গত ৩ বছর আগেও বিএনপি করতো, দেশের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিতো।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মোল্লা জানান, আবুল কাশেমের সাথে আমার ব্যক্তিগত সর্ম্পক নেই। তিনি যদি প্রার্থী হোন তাহলে বিএনপি থেকে প্রার্থী হবেন। কেন তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি? সে তো কখনো আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলো না, এমনকি উপজেলা, ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড আওয়ামীলীগেরও সদস্য পদ নেই তার।
রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সফিক মাহমুদ পিন্টু জানান, আবুল কাশেম নামে কাউকে আমি চিনি না। স্থানীয় নেতাকর্মীদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, একজন বিএনপি বা যুবদল কর্মী কিভাবে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চায় তা হাস্যকর।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ.ক.ম রুহুল আমিন জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে হলে আগে তো আওয়ামীলীগ করতে হবে। যুবদল নেতা হিসাবে আবুল কাশেম তার দলের পিঁছনে কয়েকলক্ষ টাকা খরছ করেছে যা জানতে পেরেছি। এ ধরনের বহু হাইব্রিড রয়েছে যারা দলকে বিপথগামী করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বাহার ভিপি জানান, আবুল কাশেম থাকতো সৌদি আরবে। সেখানে যুবদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও দেশে এসে বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন। লোকজন নিয়ে সাবেক সাংসদ ও বর্তমান বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন সাহেবের হাতে ফুল দিয়ে তা জানান দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম ভিপি জানান, এখন দল ক্ষমতায় নেই। আবুল কাশেমদের মতো লোক এখন অন্যদলের মনোনয়ন চায় নিজের স্বার্থ হাসিল করতে। সময় তো আর বেশি দেরি নাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা আবুল কাশেম জানান, আমি কোন দল করি আপনি ভালো করেই জানেন। আপনি আমার উপকার করেছেন, আমি সে কথা কখনো ভুলি নাই।